Description: আমি কিন্তু এই কলকাতাতেই এক অদ্ভুত রহস্যের সন্ধান পেয়েছি।’ বিমল তৎক্ষণাৎ সোজা হয়ে বসে বললে, ‘কী রকম?’ —’শুনুন বলি—আমি টালিগঞ্জের পাঁচ নম্বর মণিলাল বসু স্ট্রিটে একখানা বাড়ি ভাড়া নিয়ে আছি। বাড়িখানা খুব বড়ো আর পুরোনো। শুনেছি কোন সেকালে এখানে নাকি এক রাজা বাস করতেন—এখন তাঁর বংশের কেউ নেই। এই বাড়ির সিঁড়ির তলায় চোর—কুঠুরির মতন একখানা ঘর আছে, সে ঘর আমরা ব্যবহার করি না। এই ঘরেরই এক দেয়ালে হঠাৎ আমি একটা গুপ্তদ্বার আবিষ্কার করেছি।’ বিমল বললে, ‘সেকালকার অনেক ধনীর বাড়িতেই এমন গুপ্তদ্বার পাওয়া যায়। এ আর এমন আশ্চর্য কী? আপনি কি সেই গুপ্তদ্বার খুলেছেন?’ —’হ্যাঁ।’ —’খুলে কী দেখলেন?’ —’খালি অন্ধকার।’ —’তাহলে আমার কাছে এসেছেন কেন? অমন অনেক গুপ্তদ্বারই আমি দেখেছি। তাদের পিছনে অন্ধকার থাকতে পারে, কিন্তু কোনও রহস্য থাকে না।’ —’আগে আমার কথা শুনুন। গুপ্তদ্বার খুলে প্রথমে দেখলুম অন্ধকার। তারপর আলো জ্বেলে দেখলুম, একটা সরু পথ। সেই পথ ধরে খানিকটা এগিয়েই কি হল জানেন?’ —’কী হল?’ বিমল দেখলে, অবলাকান্তের পাথরের চোখে কোনও ভাবান্তর হল না বটে, কিন্তু তার অন্য চোখটি দারুণ আতঙ্কে বিস্ফারিত হয়ে উঠল। ভীত অভিভূত কণ্ঠে সে বললে, ‘পথটা কতখানি লম্বা জানি না, কারণ, আমার লণ্ঠনের আলো সামনের অন্ধকার ঠেলে বেশিদূর যেতে পারেনি। আমিও হাত পাঁচ—ছয়ের বেশি যেতে না যেতেই শুনতে পেলুম, নিরেট অন্ধকারের ভিতর থেকে বিকট, অমানুষিক স্বরে কে গর্জন করে উঠল। তারপরেই শুনলুম যেন কাদের দ্রুত পদশব্দ—যেন কারা দৌড়ে আমার দিকে তেড়ে আসছে! ভয়ে পাগলের মতো হয়ে আবার বাইরে পালিয়ে এলুম। সে দরজা আবার বন্ধ করে দিয়েছি।’ বিষম কৌতূহলে বিমলের দুই চক্ষু জ্বলে উঠল—এতক্ষণ পরে জাগল তার সত্যিকারের আগ্রহ!
Golpokhuro App
Listen to Complete Audiobooks